মোবাইল এর ডার্ক মোড Dark Mode কিভাবে চোখের ক্ষতি করে ?
বর্তমানে এই সমস্ত মোবাইলে
ডার্ক মোড(Dark Mode) : চোখের জন্য ভালো নাকি ক্ষতির কারণ?
একটি নতুন প্রযুক্তি আমাদের কাছে আসার পর শুরুতেই আমরা তার সব ভালো-মন্দ দিক বুঝতে পারি না। যতদিনে বুঝতে পারি, ততদিনে হয়ত অনেক দেরি হয়ে যায়
বর্তমানে স্মার্টফোন অপারেটিং সিস্টেমগুলো তাদের ইউজার ইন্টারফেসে “ডার্ক মোড” ফিচারটি বেশ ফলাও করে প্রচার করছে। গুগলের অ্যান্ড্রয়েড এবং অ্যাপলের আইওএস-এ নতুন করে ব্যবহারকারীদের মধ্যে এই ফিচারটি নতুন করে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
কিন্তু “ডার্ক মোড” নতুন কোনো ফিচার নয়। অনেক আগে থেকেই উইন্ডোজ ফোন, লিনাক্স ইত্যাদি অপারেটিং সিস্টেমে এই ফিচারটি ছিল। নতুন করে এটি জনপ্রিয় হওয়ার কারণ হলো এখন স্মার্টফোন সবার হাতে হাতে। আর রাতে আলো নিভিয়ে শুয়ে শুয়ে স্মার্টফোন চালাতে সবাই অভ্যস্ত।
অনেকেই “ডার্ক মোড” চালু করে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন কারণ সেটা বিশেষ ধরনের অ্যামোলেড ডিসপ্লেতে ব্যাটারি সেভিংয়ের পাশাপাশি সাময়িকভাবে চোখের প্রশান্তি দেয়।
কিন্তু টানা কয়েকদিন এই “ডার্ক মোড” ব্যবহার করলেই শুরু হতে পারে চোখ থেকে শুরু করে শরীরের নানান রোগ।
চলুন দেখে নেওয়া যাক-চলুন দেখে নেওয়া যাক-
নিদ্রাহীনতা
শরীরের বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন কেমিক্যাল সিগনাল কাজ করে। যেমন- ঘুম কখন আসবে, সেটা নিয়ন্ত্রণ করে মেলাটোনিন নামের হরমোন। যা মস্তিষ্কের ভেতরের পিনিয়াল গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয়। এই হরমোনটি দিনের আলো, রাতের অন্ধকার অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণে নিঃসৃত হয়ে রাতের অন্ধকারে আমাদের দেহকে বলে দেয় যে এখন ঘুমানোর সময়। তখন শরীর সকল কাজকর্ম গুটিয়ে নিয়ে ঘুমানোর প্রস্তুতি নেয়। দেখা গেছে, নিয়মিত ডার্ক মোড ব্যবহার করলে চোখ ব্রেইনকে সিগন্যাল দেয় যে সে অন্ধকারেই আছে। তখন মেলাটোনিনের অসামঞ্জস্যতা দেখা দেয়। ফলে নিদ্রাহীনতা রোগ দেখা দেয়।
সার্কাদিয়ান রিদম নষ্ট
ঘুমের সময় উল্টাপাল্টা হলে আমাদের সার্কাদিয়ান রিদম বা দেহঘড়ি বিগড়ে যায়। ফলে সার্বিকভাবে অভ্যন্তরীণ স্বাস্থ্যের একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এছাড়াও পরিমিত ঘুম আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরি। কারণ ঘুমের সময় আমাদের শরীর ক্ষতিপূরণ ও বৃদ্ধিসাধন হয়ে থাকে
গ্লুকোমা
দীর্ঘদিন অন্ধকারে স্মার্টফোন ব্যবহার করলে তার আলো চোখের অভ্যন্তরীণ চাপ বাড়িয়ে গ্লুকোমা নামের রোগের জন্ম দিতে পারে।
বিষমদৃষ্টি
ডার্ক মোড ব্যবহার করলে যাদের অ্যাস্টিগম্যাটিজম নামক দৃষ্টিত্রুটি আছে, তাদের চোখে চাপ পড়ে। যদি আপনার ডার্ক মোড ব্যবহার করতে বেশি কষ্ট হয়, তাহলে দেরি না করে একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞ দেখানো উচিত
আইরিশের প্রদাহ
চোখের ভেতরে আইরিশে পেশী আছে। যারা সঙ্কোচন ও প্রসারণের মাধ্যমে আলোর প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করে। ডার্ক ব্যাকগ্রাউন্ডে লাইট কনটেন্ট পড়তে গেলে আইরিশের ওপর চাপ পড়ে। ফলে আইরিশের প্রদাহ হতে পরে।
দৃষ্টিভ্রম
অনেক সময় ডার্ক মোড ব্যবহার করে দৃষ্টিভ্রমও হতে পারে।
পরিশেষে বলা যায়, একটি নতুন প্রযুক্তি আমাদের কাছে আসার পর শুরুতেই আমরা তার সব ভালো-মন্দ দিক বুঝতে পারি না। যতদিনে বুঝতে পারি, ততদিনে হয়ত অনেক দেরি হয়ে যায়। তাই আমাদের উচিৎ সতর্কভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার করা।
Comments 0
EmoticonEmoticon