স্পেস স্যুট কি | Space-Suit | স্পেস স্যুট এর দাম কত | সাধারণ জামা থেকে এর পার্থক্য কোথায়

    আজ এখানে এমন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চলেছি যা হয়তো আপনি কখনো চিন্তায় করেননি। হয়তো অনেক শুনেছেন যে মানুষ বিজ্ঞানের জয়যাত্রা ফলে অনেক দূর পর্যন্ত পৌঁছে গেছে এমনকি মহাকাস এ বা মহাকাশচারী হয়ে অন্য গ্রহ বা উপগ্রহে

   কিন্তু এই মহাকাশ বা অন্য কোন উপগ্রহে যারা যায় তাদেরকে আমরা বলি অ্যাস্ট্রোনট বা নভোচারী বা মহাকাশ যাত্রী। আশা করি এদের অনেকেই আপনারা টিভিতে বা মোবাইলে দেখেছেন। আর তাদেরকে খুব আলাদা ভাবে চিনতে পেরেছেন তাদের পোশাক দেখে।

   কখনো মনে হয়েছে আপনার যে - কেনই বা তাদের এই আলাদা পোশাক পরানো হয় বা এই পোশাকের বিশেষত্ব কোথায় বা এমন কোনো প্রশ্ন আপনার মাথায় কখন এসেছে কি ? যে এই পোশাক কোথায় কিনতে পাওয়া যায় বা পোশাকের দাম কত।

স্পেস স্যুট কি | Space-Suit
স্পেস স্যুট কি 

   জানি আসেনি কারণ এগুলি আমাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে এগুলো নিয়ে আমরা কখনো চিন্তা ভাবনায় করিনা । যেখানে মহাকাশে পৌঁছে যাওয়াটাই আসল সেখানে এই স্পেস স্যুট এর দাম জেনে কি হবে তাই না। তবে যদি এই স্পেস স্যুট এর দাম আপনি জানেন তাহলে অবাক হয়ে যাবেন।


স্পেস স্যুট কি ?

   আমরা সবাই নাসার অ্যাস্ট্রনটদের অর্থাৎ মহাকাশচারীদের দেখেছি, যারা মহাকাশে যাত্রা করেন এমনকি যারা চাঁদে যাত্রা করেছিল তাদের কেউ আমরা দেখেছি। আর এরা যে পোশাক পড়ে থাকে সেই সকল পোশাককে বলা হয় স্পেস স্যুট। কিন্তু আজ এমন একটি তথ্য দেব যা নাসার স্পেস স্যুট নিয়ে তা শুনে আপনি চমকে যাবেন।

   আপনি ভাবতে পারছেন যে একটি নাসার স্পেস স্যুট ( Space-Suit )এর দাম 150 মিলিয়ন ডলার থেকে বেশি। 1974 সালে বানানো একটি স্পেস স্যুট এর দাম ছিল  15 থেকে 22 মিলিয়ন ডলার আজকের দিনে দাম হয়ে দাঁড়ায় এক হাজার কোটি টাকার থেকেও বেশি।


কেনো স্পেস স্যুট এতো দামি ?

   নাসার এই স্পেস স্যুট এত দামি হওয়ার পিছনে কয়েকটি সিম্পিল কারণ আছে - 

প্রথমত বাইরে থেকে আপনি এটাকে একটি সামান্য পোশাক বা স্পেস স্যুট মনে করলেও এটি সাধারণত একটি মহাকাশযান এর মতনই কাজ। স্পেস স্যুট শুধুমাত্র মহাকাশের সূর্যের প্রখর তেজ থেকেই মহাকাশচারীদের বাঁচায় না। 

   মহাশূন্যে এমন অনেক গতিসম্পন্ন পার্টিকেল ভেসে বেড়াই যা সাধারণ কাপড় বা জামাতে লাগলে ছিড়ে এমনকি পুড়েও যেতে পারে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন যে এই পোশাক গুলি কতটা শক্ত হয়ে থাকে যে এই সকল ঘর্ষণ কে খুব সহজেই এড়িয়ে মহাকাশচারীদের বাঁচিয়ে রাখে।


দ্বিতীয়তঃ মহাকাশে সকল স্থানে বাতাসের চাপ সমান নয় এর ফলে বিভিন্ন চাপ সৃষ্টি হওয়ার ফলে শরীরের উপর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম চাপের প্রভাব পড়ে এর ফলে মানুষের বেঁচে থাকা অসুবিধাজনক। সেই কারণে এই পোশাক গুলিকে এমন ভাবে তৈরি করা হয় যাতে এর মধ্যে বাতাসের চাপ সর্বদা সমান ভাবে থাকে।


আবার তৃতীয়তঃ এই পোশাকে এমন ভাবে তৈরি করতে হয় যাতে পোশাকের মধ্যে থাকার শরীর যথেষ্ট পরিমান হাইড্রেট থাকে যদি কোন কারণে ডিহাইড্রেড হয়ে যায় তবে মহাকাশ থেকে ফেরা আর কোন মহাকাশচারী পক্ষে সম্ভব নয়। 


চতুর্থত এই পোশাকে এমনভাবে তৈরি করা থাকে যাতে এরমধ্যে খুব সহজেই অক্সিজেন চলাচল করতে পারে অর্থাৎ কোনো রকম অক্সিজেন মাক্স লাগানো ছাড়াই সমস্ত শরীরের মধ্যে এমনভাবে অক্সিজেন ভারসাম্য বজায় রাখে যাতে মহাকাশচারী কোন সমস্যা না হয়।


পঞ্চমত  পৃথিবীর সীমা থেকে এত দূরে থাকার কারণে এই মহাকাশচারীদের সাথে যোগাযোগ রাখা সম্ভব হতো না যদি না এই স্পেস স্যুট এর মধ্যে পৃথিবীর মতনই Atmosphere তৈরি করা যেত। সুতরাং এই স্পেস স্যুট কে এমন ভাবে তৈরি করা যাতে এমন বায়ুমণ্ডল বজায় থাকে যে যোগাযোগব্যবস্থা মহাকাশচারীর সঙ্গে সম্ভব হয়।

100 Interesting Fact in Hindi

    বর্তমান দিনের NASA তাদের আগামী দিনের মহাকাশ যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে এই স্পেস স্যুট গুলি বহুগুণ সক্ষম করে তুলতে চলেছে যার দাম 500 মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর যা ভারতীয় মূল্য প্রায় 3 হাজার 800 কোটি টাকা হতে পারে।

   আশা করি এই মহাকাশ যাত্রীদের পরে থাকা পোশাক সম্পর্কে আপনার কোন ধারনা ছিল না আর এ পর্যন্ত পড়ে আপনার কিছুটা ধারনা হলো।


    আসলে মহাকাশে যে সকল মহাকাশ যাত্রীরা যায় তাদের কাছে মহাশূন্য কোনভাবেই সহনশীল পরিবেশ নয় যেখানে মানুষ খুব সহজে বাঁচতে পারবে। আর এ কারণে স্পেস স্যুট গুলিকে এমনভাবে তৈরি করা হয় যেখানে পৃথিবীতে বসবাসকারী মানুষের উপযোগী পরিমণ্ডল তৈরি করা থাকে।

   আর স্পেস স্যুট এর মধ্যে এই ধরনের পরিবেশ গড়ে তুলতে গেলে সেখানে প্রচুর পরিমাণে টেকনোলজিকে প্রয়োগ করতে হয় আর এত পরিমাণে টেকনোলজির প্রয়োগ করার জন্য ও সুরক্ষিত রাখার জন্য স্পেস স্যুট এর দাম আমাদের চিন্তা ভাবনার বাইরে।


👉👉   আশাকরি আমাদের এই তথ্যটি আপনার অনেক ভাল লেগেছে এরকম অজানা তথ্য জানতে হলে অবশ্যই আমাদের সঙ্গে থাকুন ভাল লাগলে কমেন্ট করুন ধন্যবাদ।


READ MORE